টাঙ্গাইলে দুই শিশু হত্যায় তিনজ‌দনের মৃত‌্যুদণ্ড, ৩ জনের আমৃত‌্যু ও ৩ জনের যাবজ্জীবন

স্টার্ফ রিপোর্টার
প্রকাশিত: ০২:২১ পিএম, সোমবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২০ | ৪৫৪

টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে দুই শিশুকে অপহরণের পর হত্যার ঘটনায় নয়জন আসামীর তিনজনকে মৃত‌্যুদণ্ড, তিনজনকে আমৃত‌্যু কারাদণ্ডসহ বা‌কিদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। এছাড়া প্রত্যেককে একলাখ টাকা করে জ‌রিমানা করা হয়। এসময় আটজন আসামী আদালতে হা‌জির ছিলেন।

সোমবার (১৪ ডিসেম্বর) দুপুরে টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক সাউদ হাসান এই রায় ঘোষনা করেন। 

মৃত্যদন্ডপ্রাপ্তরা হচ্ছে, ধামরাই উপজেলার চর চৌহাট গ্রামের তারা মিয়ার ছেলে মিল্টন, একই গ্রামের শামছুল হকের ছেলে বাহাদুর মিয়া ও মির্জাপুর উপজেলার সুজা‌নিলজা গ্রামের বাছেদ মিয়ার ছেলে র‌নি মিয়া। 

আমৃত‌্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, ধামরাই উপজেলার চৌহাট গ্রামের আফসার উ‌দ্দিনের ছেলে শা‌হিনুর এলাইজ শাহা, শশ্বধরপ‌ট্টি গ্রামের মম‌রেজের ছেলে জ‌হিরুল ইসলাম ও মির্জাপুর উপজেলার আমরাইল তেলীপাড়া গ্রামের শাহাদত হোসেনের ছেলে আব্দুল মালেক। 

এছাড়া বা‌কি তিনজন যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্তরা হলেন, ধামরাই উপজেলার চর চৌহাট গ্রামের তাজেল মিয়ার ছেলে আ‌রিফ, ও মির্জাপুর উপজেলার আমরাইল তেলীপাড়ার জব্বার ম‌ল্লিকের ছেলে জা‌কির হোসেন ও ধামরাই উপজেলার চর চেহৈাট গ্রামের আফসার উ‌দ্দিনের ছেলে শামীম মিয়া। এ‌দের মধ্যে আ‌রিফ পলাতক রয়েছে।

টাঙ্গাইল জেলা দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত সরকারি কৌশুলি (এপিপি) খো‌রশেদ আলম জানান, ২০১৬ সালের ২৭ জানুয়ারি বিকেলে ঢাকার ধামরাই উপজেলার চর চৌহাট এলাকার প্রবাসী দেলোয়ার হোসেনের ছেলে ও ধারমাইয়ের বালিয়া ব্রাক স্কুলের চতুর্থ শ্রেণীর শিক্ষার্থী শাকিল (১১) ও একই গ্রামের প্রবাসী আবু বক্করের ছেলে ইমরান (১১) বাড়ি থেকে পার্শ্বব‌র্তি টাঙ্গাইল জেলার মির্জাপুর উপজেলার হারিয়া বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা দেখতে এসে নিখোঁজ হয়।

পরদিন ২৮ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার মোবাইল ফোনে দুইজনের জন‌্য দুই প‌রিবারের কাছে এক লাখ করে দুই লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে অপহরণকারীরা।

পরে ২৯ জানুয়ারি শুক্রবার রাতে মির্জাপুর উপজেলার হাড়িয়া গ্রামের একটি লেবু বাগান থেকে নিখোঁজ ওই দুই শিশুর জবাই করা লাশ উদ্ধার করা হয়। ৩০ জানুয়ারি শনিবার নিহত শা‌কিলের মা জোসনা বেগম বাদি হয়ে মির্জাপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশ ১১ জনের নাম উল্লেখ করে ৮ জুন আদালতে চার্জশিট জমা দেয়। এতে দুই জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমানিত না হওয়ায় তাদের মামলা থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়। 

এরপর পু‌লিশ ৮ আসামীকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা করে। বাকি এক আসামী এখনও পলাতক রয়েছেন। 

আসামীরা হলেন, তারা মিয়ার ছেলে মিল্টন (২২), শামছুল হকের ছেলে বাহাদুর মিয়া (২২), ধামরাই উপ‌জেলার চৌহাট গ্রামের আফসার উ‌দ্দিনের ছেলে শা‌হিনুর এলাইজ শাহা (৩০), শশ্বধরপ‌ট্টি গ্রামের মমরেজের ছেলে জ‌হিরুল ইসলাম (২০),  মির্জাপুর উপজেলার সুজা‌নিলজা গ্রামের বাছেদ মিয়ার ছেলে র‌নি মিয়া (২৫), ধামরাই উপ‌জেলার চর চেহৈাট গ্রা‌মের আফসার উ‌দ্দিনের ছে‌লে শামীম মিয়া (২৫), মির্জাপুর উপ‌জেলার আমরাইল তেলীপাড়া গ্রামের শাহাদত হোসেনের ছেলে আব্দুল মালেক (৩৫), ধামরাই উপ‌জেলার চর চৌহাট গ্রামের ত‌াজেল মিয়ার ছেলে আ‌রিফ (২৮), ও মির্জাপুর উপ‌জেলার আমরাইল তেলীপাড়ার জব্বার ম‌ল্লি‌কের ছে‌লে জা‌কির হোসেন (২৮)।

এছাড়া হত‌্যা মামলায়  অব‌্যহ‌তিপ্রাপ্তরা হলেন, ধামরাই উপ‌জেলার চর চৌহাট গ্রা‌মের রমজান আলীর ছেলে মো. শ‌হিদুল ইসলাম (৩০) ও মির্জাপুর উপ‌জেলার হা‌ড়িয়া দ‌ক্ষিণপাড়া গ্রামের ময়নাল হকের স্ত্রী মনোয়ার (৩৮)। 

এদের মধ্যে যাবজ্জীবন আ‌রিফ পলাতক রয়েছেন।

নিহত শা‌কিলের মা জোসনা বেগম বলেন, আসামীদের যে রায় দেয়া হয়েছে তাতে সন্তু‌ষ্টি প্রকাশ কর‌ছি। অ‌তিদ্রুত রায় কার্যকর করার জন‌্য আহ্বান জানান তি‌নি।