মাত্র ১৫ কাঠা জমিতে ‘হাজারী’ লাউ চাষে প্রতিদিন আয় এক হাজার টাকা


নাটোরের বাগাতিপাড়ায় মাত্র ১৫ কাঠা জমিতে মাচায় ‘হাজারী’ জাতের লাউ চাষ করে আবু তালেব প্রতিদিন গড়ে আয় করছেন এক হাজার টাকা। উপজেলার সদর ইউনিয়নের বিলগোপালহাটি গ্রামের শেখপাড়া মাঠে পাকা সড়কের ধারে তার জমিতে মাচায় ধরে আছে ছোট বড় শতশত লাউ।
এই জাতের লাউয়ের চাষ ব্যাপক ভাবে সাড়া জাগিয়েছে এলাকার কৃষকদের মধ্যে। তার পরিশ্রম নিজেকে পরিণত করেছেন অনুকরণীয় দৃষ্টান্তে।
জানা যায়, আবু তালেব ওই জমিতে মাচায় পটলের চাষ করেছিলেন। কিন্তু চলতি মৌসুমে অধিক বৃষ্টিপাত হওয়ায় পচন রোগে পটলের গাছ নষ্ট হয়ে যায়, ফলে বিপাকে পড়ে যান তিনি। পরে স্থানীয় কৃষকদের পরামর্শে ভাদ্র মাসে জমিতে হাজারী জাতের লাউ বীজ রোপন করেন তিনি। দুই মাস পরিচর্যার পরে কার্তিক মাস থেকে পুরাদোমে লাউ উঠতে শুরু করে। প্রথম থেকেই ভালো দাম পাওয়ায় প্রতিদিন গড়ে এক হাজার টাকার লাউ বিক্রয় করছেন। বর্তমানে স্থানীয় বিভিন্ন বাজারসহ নাটোর সদরে পাইকারি প্রতিটি লাউ ২৫ টাকা দরে বিক্রয় করছেন। এ জাতের লাউ চাষে খরচ খুবই কম। তিনি সার হিসেবে প্রতিসপ্তাহে পাঁচ কেজি ডিএপি সার ও দুই কেজি ইউরিয়া সার দিয়ে থাকেন। আর সপ্তাহে একবার হালকা কিটনাশক দিয়ে স্প্রে করেন। রক্ষণাবেক্ষণের জন্য তেমন কিছু পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন হয় না। তেমন কোনো বাড়তি খরচও নেই। লাউ শীতকালীন ফসল হলেও এখন সারা বছরই এই জাতের লাউ চাষ করা সম্ভব। চারা রোপনের ৪৫ দিন পর থেকে কচি লাউ বাজার জাত করা যায়।
আবু তালেব জানান, তিনি ১৫ কাঠা জমিতে হাজারী জাতের লাউ চাষ করে কার্তিক মাস থেকে গড়ে প্রতিদিন এক হাজার টাকার লাউ বিক্রয় করছেন। শুরুতে প্রতিটি লাউ ৪০ টাকা দরে বিক্রয় করলেও আস্তে আস্তে দাম কমছে। তবে উৎপাদনও দিন দিন বৃদ্ধি পাওয়ায় আয়ের পরিমান একই রয়েছে। আর এই ধারাবাহিকতায় আগামী চৈত্র মাস পর্যন্ত বিক্রয় করতে পারবেন বলেও তিনি আশা করছেন।
এ বিষয়ে কৃষি কর্মকর্তা মোমরেজ আলী জানান, চলতি মৌসুমে বাগাতিপাড়ায় ২’শত বিঘা জমিতে ৩’শত ৫০ জন কৃষক বানিজ্যিক ভাবে লাউ চাষ করেছেন। আর এই লাউ উপজেলার চাহিদা মিটিয়ে চলে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন বাজারে। রাসায়নিক বিষাক্ত সার মুক্ত লাউ চাষ পুষ্টিকর ও লাভজনক এবং সহজেই চাষ যোগ্য হওয়ায় অর্থনৈতিকভাবে এলাকার কৃষকরা হয়ে উঠছেন স্বাবলম্বি। এই জন্য প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ ও পরামর্শসহ সব ধরনের সহযোগিতা করে যাচ্ছেন উপজেলা কৃষি বিভাগ।