টাঙ্গাইলের ঘারিন্দা উত্তর তারুটিয়ায় নদী ভাঙন আতঙ্কে মানুষ

স্টার্ফ রিপোটার
প্রকাশিত: ০৭:৪৭ পিএম, শনিবার, ১৮ জুলাই ২০২০ | ৫৪৫

টাঙ্গাইল সদরে ঝিনাই নদী পানি দ্বিতীয় দফায় বৃদ্ধি পেয়ে নতুন করে ভাঙন শুরু হয়েছে। টাঙ্গাইল সদরের ঘারিন্দা ইউনিয়নের ৩নং ওর্যাডের উত্তর তারুটিয়ায় প্রায় অর্ধশত ঘরবাড়ী ঝিনাই নদীর গর্ভে চলে গেছে। এতে প্রায় ২৫০টি পরিবার পানি বন্দী হয়ে পড়েছে। ভাঙন আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন স্থানীয় তিন মুক্তিযোদ্ধার পরিবারসহ নদী তীরবর্তী মানুষ।

শনিবার (১৮ জুলাই) সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নদী তীরবর্তী মানুষ তাদের ঘরবাড়ী সরাতে ব্যস্ত। স্থানীয় বাসিন্দারা আতঙ্কে রাত কাটাচ্ছে। এদের অনেকেই ঘরবাড়ী অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে গেছে।

উত্তর তারুটিয়ার বাসিন্দা মুক্তিযোদ্ধা আক্তারুজ্জামান খানের ছেলে রানা খান জানান, শুকনো মৌসুমে অবৈধভাবে ড্রেজার মেশিন দিয়ে মাটি তোলার কারণে আমাদের বাড়ি ভাঙ্গনের সম্মুখীন হয়েছে। ইতিমধ্যে আমাদের বাড়ি অর্ধেক ভেঙে গেছে। বাড়িটি ভেঙে গেলে কোথায় যাব চিন্তায় আছি। প্রশাসনের কাছে আমাদের দাবি শুকনো মৌসুমে যেন এই নদী থেকে আর বালু উত্তোলন না করা হয় এবং এই নদীতে স্থায়ী একটা বাঁধ যেন নির্মাণ করা হয়।

স্থানীয় বাসিন্দা এ আর খান জানান, আমি যখন এই বাড়ীটি করলাম তখন নদী ছিল অনেক দূরে। কয়েক বছর ধরে নদীতে ড্রেজার দিয়ে বালু তোলার কারণে নদীটা খুব দ্রুত ভেঙ্গে আসছে। আমার যেখানে ঘর ছিল সে জায়গা ভেঙে গেছে, পরে অন্য যায়গায় ঘর তুলছি। কিন্তু সেখানেও বন্যার পানি এসেছে। এখন কোথায় যাব চিন্তায় আছি। এভাবে ভাঙলে আমাদের এই উত্তর তারুটিয়া এলাকাই বিলীন হয়ে যাবে।

স্থানীয় বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা দুলাল হোসেন জানান, আমিসহ এখানে তিন-চারজন মুক্তিযোদ্ধা বসবাস করি। ইতিমধ্যে একজন মুক্তিযোদ্ধার বাড়ি নদীতে চলে গেছে। প্রায় দেড় বছর আগে আমরা নদী ভাঙন রোধের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাছে দরখাস্ত করেছিলাম। কিন্তু তারা কোন কাজ আজ পর্যন্ত করেনি। যদি তারা কাজ করতো তবে আজ আমাদের বাড়িঘর নদীতে ভাঙতো না। আমার বাড়িটিও ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। বাড়িটি ভেঙে গেলে আমরা কোথায় যাব। আমাদের যাওয়ার আর কোন যায়গা নেই। স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের কাছে আমাদের আবেদন খুব দ্রুত এই ভাঙ্গন রোধে কিছু ব্লক ফেলে আমাদের বাড়িঘর রক্ষা করা উচিত।

ঘারিন্দা ইউনিয়নের ৩নং ওর্য়াডের মেম্বার সৈয়দ কবিরুজ্জামান ডন জানান, বিগত কয়েক বছর ধরে সাবেক ও বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যানের কাছে আবেদন করেছি। যে অংশে ভাঙছে সেখানে একটি বাঁধ দিলে ভাঙন রোধ করা সম্ভব। কয়েক দিনের ভাঙনে এরই মধ্যে কয়েক ঘরবাড়ি বিলীন হয়ে গেছে। উপজেলা চেয়ারম্যানকে এলাকায় আসার জন্য অনুরোধ করেছিলাম। কিন্তু সে এই ইউনিয়নে এসেছিলেন। কিন্তু ভাঙন এলাকায় আসেননি। সেই করোনার শুরু থেকে আজ পর্যন্ত আমি আমার এলাকার জন্য কোন সরকারি সাহায্য পাইনি। আমাদের দাবি একটাই এখানে একটা স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করা হোক। এখানে দশ কেজি চাল বা কোনো ত্রাণ আমাদের প্রয়োজন নেই। এই এলাকা যেন না ভাঙে সেই ব্যবস্থা আমরা চাই।