পানি বাড়ার সাথে সাথেই শুরু হয়েছে যমুনার ভাঙন

ভূঞাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ০৩:১৯ পিএম, মঙ্গলবার, ১২ মে ২০২০ | ৪০৯

 টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে যমুনা নদীতে গত বছর ধরে বন্যার কারণে ব্যাপক ভাঙনের সৃষ্টি হয় । এতে করে শতশত পরিবার তাদের বসতবাড়ি হারিয়েছে। ফসলের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়েছে। সম্প্রতি যমুনা নদীর পানি বাড়তে শুরু হওয়ায় যমুনার পূর্বপাড়ে দেখা দিয়েছে ব্যাপক নদী  ভাঙন। নতুন করে পানি বাড়ার ফলে উপজেলার গোবিন্দাসী ইউনিয়নের খানুরবাড়ী, কষ্টাপাড়া ও ভালকুটিয়া গ্রামে ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। এতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে নদীপাড়ে বসবাসরত লোকজন। হুমকির মুখে রয়েছে প্রাথমিক বিদ্যালয়, মসজিদ, মন্দির, পোল্ট্রি খামার সহ শতশত পরিবার। ইতিমধ্যে নদীগর্ভে বিলীণ হয়ে গেছে একটি মসজিদ ।

সরেজমিনে জানা যায়, গত বছর বন্যায় উপজেলার গোবিন্দাসী ইউনিয়নের যমুনা নদীর ভাঙ্গনে বসতভিটা হারিয়ে গৃহহীন হয়ে রাস্তার পাশে অসহায় জীবন-যাপন করছে শতশত পরিবার। গত বছর খানুরবাড়িতে দুইশ মিটার নামমাত্র জিওব্যাগ ফেলে টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ড। যা ভাঙ্গনরোধে কোনো কাজেই আসেনি। এতে সরকারের কোটি কোটি টাকা পানিতে চলে গেছে। তবে যমুনা নদী থেকে বালু উত্তোলন অব্যাহত থাকলে ভাঙ্গনের তীব্রতা আরো বাড়বে বলে জানায় এলাকাবাসীরা। এ থেকে রক্ষা পেতে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ অতি জরুরী বলে মনে করছেন স্থানীয় জনগণ।

ভাঙন কবলিত এলাকার সুরুজ মিয়া বলেন, গত বছর বন্যা ও ভাঙ্গনের ফলে মাথা গোঁজার যে জায়গা টুকু ছিল তা যমুনার গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এখন আমরা অন্যের জায়গায় ঘর উঠিয়ে বসবাস করতেছি। গত বছর কিছু ব্যাগ ভর্তি মাটি ফেলেছিল কিন্তু ড্রেজার মেশিন দিয়ে মাটি তোলার কারণে সেগুলো কোন কাজে অাসেনি।

অন্যদিকে ভালকুটিয়া গ্রামের আমিনুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, খানুরবাড়ী গ্রামের কিছু জায়গায় জিওব্যাগ ফেলা হয়েছিল, আর সে সব স্থানে ক্ষণিকের জন্য ভাঙ্গন বন্ধ ছিল। কিন্তু এ বছর নতুন করে পানি ভাড়ার সাথে সাথেই নদী ভাঙ্গনের সৃষ্টি হয়েছে। অন্যদিকে আমাদের ভালকুটিয়া গ্রামে কোন জিওব্যাগ ফেলা হয়নি বিধায় নতুন করে আবার তীব্র ভাঙ্গন শুরু হয়েছে।

গোবিন্দাসী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম আমিন বলেন, গোবিন্দাসী  ইউনিয়নের খানুরবাড়ী থেকে ভালকুটিয়া পর্যন্ত প্রায় ৫০০ ঘরবাড়ি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এই মুহূর্তে স্থায়ী বাঁধ দিতে না পারলে খানুরবাড়ী, কষ্টাপাড়া ও ভালকুটিয়া গ্রামসহ গোবিন্দাসী বাজারও নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। তিনি আরো বলেন, আমি এমপি মহোদ্বয়কে অবগত করেছি, আশা করি তিনি দ্রুত পদক্ষেপ নিবেন।

এ বিষয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য তানভীর হাসান ছোট মনির ভালকুটিয়া স্কুল মাঠে ত্রাণ বিতরণ কালে বলেন, করোনার কারণে আমরা সবাই ত্রাণ কার্যক্রমে ব্যস্ত রয়েছি। আপনাদের এলাকায় অর্থনৈতিক জোন হবে এবং স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করা হবে যাতে এই এলাকার মানুষকে আর নদী ভাঙ্গনের কবলে না পরতে হয়। প্রাণঘাতী করোনার কারণে কাজটি স্থগিত রয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে অতি দ্রুতই বাঁধের কাজ শুরু হবে।