টাঙ্গাইলে বঙ্গবন্ধুর খুনিদের জন্য দোয়া, মাদ্রাসা অধ্যক্ষ গ্রেপ্তার
বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে শহীদদের সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর খুনিদের জন্য দোয়া প্রার্থনা করায় টাঙ্গাইলে এক আলীয়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
শনিবার গোপালপুর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কার্যালয়ের অনুষ্ঠানে এ ঘটনা ঘটে বলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আহাদুজ্জামান জানান।
গ্রেপ্তার ফায়জুল আমিন সরকার গোপালপুর দারুল উলুম কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ।
আহাদুজ্জামান বলেন, সকাল ৮টায় উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কার্যালয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুস্পমাল্য অর্পণের আগে একাত্তরে শহীদদের রুহের মাগফেরাত কামনা করে দোয়ার আয়োজন করা হয়।
“উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত এ দোয়া অনুষ্ঠানে মোনাজাত পরিচালনা করেন গোপালপুর কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ফায়জুল আমিন সরকার।”
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, দোয়া অনুষ্ঠানে ফায়জুল আমিন বলেন- “হে আল্লাহ, তুমি পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধু হত্যাকারী যাদের ফাঁসি হয়েছে তাদের বেহেস্ত নসীব করো। হে আল্লাহ, তুমি বিচারের পর তাদেরকে বেহেস্ত নসীব করো।”
দোয়া অনুষ্ঠানে উপস্থিত গণমাধ্যমকর্মীসহ প্রশাসনের কর্মকর্তা ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা তার এ বক্তব্যে হতবাক হয়ে যান। এ সময় উত্তেজনা দেখা দিলে উপস্থিত নেতৃবৃন্দ সকলকে শান্ত করেন বলে আহাদুজ্জামান জানান।
প্রত্যক্ষদর্শী উপজেলা নির্বাহী অফিসার দিলরুবা শারমীন বলেন, দোয়া অনুষ্ঠানে এ ধরনের দুর্ভাগ্যজনক বক্তব্য শুনে তিনি নিজের কানকে প্রথমে বিশ্বাস করতে চাননি। একই কথা আবার পুনরাবৃত্তি করলে তিনি মনোযোগ দিয়ে তা শোনেন।
পরে আশপাশে যারা ছিলেন তাদের কাছে আবার শুনে নিয়ে তিনি শতভাগ নিশ্চিত হন এবং ওই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেন বলে জানান।
আরেক প্রত্যক্ষদর্শী গোপালপুর থানার ওসি হাসান আল মামুন বলেন, “এমন ঘটনা সত্যিই হতবাক হওয়ার মতো। ঘটনার পরপরই তাকে আটক করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে মামলা নেওয়া হবে।”
সাবেক উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার এবং গোপালপুর কামিল মাদ্রাসার পরিচালনা কমিটির সভাপতি আব্দুস সোবহান তুলা বলেন, “মুখ ফসকে হয়তো তিনি একথা বলেছেন। তবে তাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হবে।”
অনুষ্ঠানে উপজেলা চেয়ারম্যান ইউনুস ইসলাম তালুকদার, উপজেলা নির্বাহী অফিসার দিলরুবা শারমীন, ওসি হাসান আল মামুন, ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মরিয়ম আক্তার মুক্তা, পৌর মেয়র রকিবুল হক ছানা, জেলা পরিষদ সদস্য মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল কাদের তালুকদার, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির টাঙ্গাইল জেলা আহবায়ক কেএম আব্দুস সালাম, সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আব্দুস সোবহান তুলাসহ আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী ও গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
