সচিব আসবেন তাই দুই সপ্তাহ ধরে ক্লাস বন্ধ


সচিব মহোদয় স্কুল পরিদর্শনে আসবেন তাই মির্জাপুর উপজেলা সদরের বাইমহাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ক্লাস বন্ধ রেখে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের গত দুই সপ্তাহ ধরে দিনভর শারীরিক কসরত শেখানো হচ্ছে।
এতে শিক্ষার্থীর অভিভাবকদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। তবে শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে কেউ এ ব্যাপারে প্রকাশ্যে মুখ খুলছেন না বলে জানা গেছে।
বিদ্যালয়ের সাথে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানান, আগামী ২৮ নভেম্বর প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আকরাম আল হোসেন ওই বিদ্যালয়টি পরিদর্শনে আসবেন। সেজন্য ওই গ্রামের প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা রবি মিত্রর বাড়ির উত্তর পাশে একটি খোলা জায়গায় সকাল আটটা থেকে সন্ধা পর্যন্ত কোমলমতি শিক্ষার্থীদের নানা ধরনের শারীরিক কসরত করানো হচ্ছে।
গত দুই সপ্তাহ ধরে বিদ্যালয়ে ক্লাস বন্ধ রেখে এই শারীরিক কসরত করানো হচ্ছে। অবশ্য দুপুরে এক ঘন্টা খাওয়ার বিরতি দেয়া হয় বলে জানা গেছে। এই শারীরিক কসরত ওই বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষকরা তত্বাবধান করছেন।
এদিকে আগামী ৮ ডিসেম্বর থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বার্ষিক পরীক্ষা শুরু হবে। তার আগে দিনভর কোমলমতি শিক্ষার্থীদের দিয়ে এ ধরনের শারীরিক পরিশ্রম করাতে অভিভাবকদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। তবে শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে কেউ এ ব্যাপারে প্রকাশ্যে মুখ খুলছেন না বলে জানা গেছে। এই শারীরিক কসরতের পোষাক-আশাকের জন্য শিক্ষার্থী প্রতি চারশ করে টাকা নেয়া হচ্ছে বলে নাম পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক অভিভাবক জানিয়েছেন।
সচিব মহোদয়ের কাছে যাতে বাহুবা পাওয়া যায় সেজন্য ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা হোসনে আরা বেগম তার একক সিদ্ধান্তে বার্ষিক পরীক্ষার আগে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের এই শারীরিক পরিশ্রম করাচ্ছেন বলে একাধিক সূত্র অভিযোগ করেছেন। প্রধান শিক্ষককের একক সিদ্ধান্তে এই শারীরিক কসরত করানো হচ্ছে বলে বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক মন্ডলীও জানিয়েছেন।
সচিব মহোদয়কে বিদ্যালয়ের যে কক্ষে খাওয়ানো হবে সে কক্ষটি সাজ সজ্জার জন্য প্রায় ৫০ হাজার টাকা খরচ করা হয়েছে বলে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সদস্যরা জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা হোসনে আরা বেগমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি রেগে বলেন, শারীরিক কসরত শিক্ষাও প্রাথমিক শিক্ষার অন্তর্ভূক্ত। তাছাড়া ভারতেশ্বরী হোমসের ছাত্রীদের সারা বছর শারীরিক কসরত করানো হয় সে ব্যাপারে কোন সাংবাদিক তাদেরকে প্রশ্ন করেন কিনা তা রাগান্বিত হয়ে জানতে চান।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো. আলমগীর হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে ক্লাস বন্ধ রেখে শারীরিক কসরত করানোর বিষয়ে তার কাছ থেকে কোন অনুমতি নেয়া হয়নি বলে তিনি জানিয়েছেন।