বিয়ের আগের দিন মাদরাসার
শিক্ষক নিখোজ, এক মাসেও সন্ধান মেলেনি


বিয়ের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন। আত্মীয় স্বজনও বাড়িতে চলে এসেছে। রাত পোহালেই বর কনের দেখা হবে এমন সময় বর নিখোঁজ। অবশেষে বন্ধ হয়ে গেল বিয়ে। এক মাসেও সন্ধান না পাওয়ায় বরের পরিবার পুলিশের ভুমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।
বর নিখোঁজের এই ঘটনাটি ঘটেছে ২৮ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার বাশতৈল ইউনিয়নের উত্তর পেকুয়া গ্রামে। বরের নাম ইউসুফ আলী (৩০)। তার বাবার নাম আব্দুল্লাহেল কাফী। ইউসুফ বাসাইল উপজেলার টেঙ্গুরিয়াপাড়া ফাজিল মাদরাসার আরবি বিভাগের প্রভাষক। সম্প্রতি পরিবারের পক্ষ থেকে ইউসুফের বিয়ে ঠিক হয় জামালপুর জেলা সদরের সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ধর্মীয় বিভাগের সহকারী শিক্ষক আব্দুল হালিম মিয়ার মেয়ের সঙ্গে।
গত ২৯ সেপ্টেম্বর শুক্রবার ছিল বিয়ের দিন। এ উপলক্ষে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়। বৃহস্পতিবার বিকেলে ইউসুফের বড় ভাই ইব্রাহীম তক্তারচালা বাজার থেকে মোবাইল ফোনে কথা বলে তাকে বাজারে যেতে বলে। ইউসুফ বাজারের উদ্দেশে বের হয়ে সন্ধ্যার মধ্যে বাড়ি না ফেরায় পরিবারের লোকজন বিভিন্ন জায়গায় খুঁজতে শুরু করে। ২৪ ঘণ্টায় তার কোনো খোঁজ না পেয়ে ২৯ সেপ্টেম্বর শুক্রবার ইব্রাহীম মির্জাপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন।
ইউসুফ আলী নিখোঁজের এক মাস পার হলেও কোনো খোঁজ না পাওয়ায় পরিবারের লোকজন চরম দুশ্চিন্তাার মধ্যে রয়েছে। ইউসুফের বড় ভাই ইব্রাহীম বলেন, ‘এক মাসেও ইউসুফের কোনো খোঁজ না পেয়ে আমরা পরিবারের সবাই উদ্বিগ্ন। পুলিশের নিকট থেকে আমরা আশানুরুপ সারা পাচ্ছিনা। তার বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে আমরা কিছু বলতে পারছিনা।’তিনি বলেন আমাদের অস্বচ্ছল পরিবারের উপার্জনক্ষম ছোট ভাইকে না পেয়ে আমরা চরমভাবে বিপাকে পড়েছি।
ইউসুফ যে মাদরাসায় চাকুরী করে সেখানকার স্থানীয় লোকজন ওই মাদরাসার দশম শ্রেণির এক ছাত্রীকে জোরপূর্বক ইউসুফের সাথে বিয়ে দিতে চেয়েছিল। ইউসুফের যেদিন বিয়ের তারিখ ছিল সেইদিনই ওই ছাত্রীর নানা আদাজান গ্রামের মো. ইছাক মিয়া সহ কয়েকজন লোক এসে ইউসফের বিয়ে বন্ধ করতে বলে, তানাহলে অসুবিধা হবে বলে হুমকি দিয়ে যায়। ওইদিনই ইউসুফ নিখোজ হয় বলে ইব্রাহীম জানান।
ইউসুফ আলীর কর্মস্থল টেঙঙ্গুরিয়া ফাজিল মাদরাসার সুপার এ এফ এম করিম বলেন, ‘ইউসুফকে আমরা ভালো ছেলে হিসেবেই জানি। সে কোনো সমস্যায় আছে কিনা তা কখনো আমাদের কাছে বলেনি। তার আকস্মিক নিখোঁজের খবরটি আমাদেরকেও ভাবিয়ে তুলেছে।’ এ ব্যাপারে মির্জাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এ কে এম মিজানুল হক জানান, ইউসুফের ভাই ইব্রাহীম বাদী হয়ে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছে। তাকে উদ্ধারের জন্য পুলিশ সর্বাত্মকভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে বিভিন্ন গোপন তথ্যের ভিত্তিতে অনুমান করা যায় যে, সে নিজেই আত্মগোপন করে থাকতে পারে।