পদ্মা সেতুর দেড় কিলোমিটার দৃশ্যমান


পদ্মা সেতুতে মাওয়ায় আজ বুধবার দুপুরে দশম স্প্যান বসানো হয়েছে। দুপুর সাড়ে ১২টায় সেতুর মাওয়া প্রান্তের ১৩ ও ১৪ নং খুঁটির ওপর ৩ নং মডিউলের ‘৩-এ’ নম্বর স্প্যানটি বসানোর কাজ সম্পন্ন হয়। এরফলে পদ্মা সেতুর দেড় কিলোমিটার দৃশ্যমান হলো।
ভাসমান ক্রেনবাহী জাহাজটি কুমারভোগ কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড থেকে স্প্যানটি (সুপার স্ট্রাকচার) নিয়ে বুধবার সকাল ৮টা ২০মিনিটের দিকে রওনা হয়ে ৯টার দিকে ১৩ ও ১৪ নং খুঁটির সামনে চলে আসে। স্প্যানবাহী জাহাজটি যথাযথ স্থানে নোঙ্গর করে স্প্যানটি খুঁটিতে বসানোর প্রক্রিয়া শুরু করে বলে জানিয়েছে বাসস।
সেতু কর্তৃপক্ষের উপ-সহকারী প্রকৌশলী হুমায়ুন কবির জানান, সেতুর ১৩ ও ১৪ নম্বর পিলারের ওপর স্প্যানটি বসানোর মাধ্যমে সেতুর দেড় কিলোমিটার দৃশ্যমান হলো। মাওয়া কুমারভোগ কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড থেকে তিন হাজার ৬শ’ টন ধারণ ক্ষমতার ‘তিয়ান ই ভাসমান’ ক্রেনটি বহন করে নিয়ে যায়। ধূসর রঙের ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের ও ৩ হাজার ১৪০ টন ওজনের স্প্যানটি বসানো হয়।
সেতুর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বহু প্রতীক্ষার পর মাওয়া প্রান্তে এই স্প্যানটি বসলো। যদিও পদ্মা সেতুর প্রথম স্প্যানটি বসানোর কথা ছিল মাওয়া প্রান্তে। কিন্তু নদীর তলদেশের মাটি নরম থাকায় এ পাড়ের কাজ পরে ধরা হয়। আগে তাই জাজিরায় কাজ শুরু হয়। একে একে জাজিরায় ৮টি স্প্যান বসানো হয়েছে। এবার স্প্যান বসলো মাওয়ায়। তাই পদ্মার এ পাড়ের মানুষ অনেক খুশি।
এর আগে অস্থায়ীভাবে মাওয়া প্রান্তে ৪ ও ৫ নম্বর খুঁটিতে একটি স্প্যান বসানো হয়। ৬ ও ৭ নম্বর খুঁটিতে এটি বসানোর কথা ছিলো। কিন্তু ৬ ও ৭ নং খুঁটি প্রস্তুত না থাকায় অস্থায়ীভাবে এটি ৪ ও ৫ নম্বর খুঁটিতে বসানো হয়েছে।
একই সঙ্গে প্রথম পর্যায়ে জটিলতা সৃষ্টি হওয়া ৬ ও ৭ নম্বর খুঁটির পাইল অবশেষে শেষ হতে যাচ্ছে বৃহস্পতিবার। ৭ নম্বর খুঁটিতে ৭টি পাইলই স্থাপন হয়ে গেছে। এর মধ্যে চারটি ট্যাম (খাঁজকাটা) পাইল। আর ৬ নম্বর খুঁটির ৬টি পাইলই সম্পন্ন হয়েছে। বাকি একটি পাইলও সম্পন্ন হওয়ার পথে। বাকি অংশটুকু বৃহস্পতিবার শেষ হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তরা জানিয়েছেন, সেতুর ১১তম স্প্যান বসতে যাচ্ছে ২০ এপ্রিল জাজিরায় ৩৪ ও ৩৩ নম্বর খুঁটিতে। ‘৬সি’ নম্বর স্প্যানটি বসানোর পরিকল্পনাও এখন চূড়ান্ত। ৩৪ নম্বর খুঁটিতে লিফটিং ফ্রেম (স্প্যান ঝুলিয়ে রাখার যন্ত্র) বসানো হচ্ছে এখন।
তারা আরও জানান, পদ্মা মূল সেতুর ২৯৪টি পাইলে থাকবে মোট ৪২টি খুঁটি। যার মধ্যে নদীর মধ্যে ২৬২টি পাইল। মূল সেতুর ২৯৪টি পাইলের মধ্যে ইতোমধ্যে ২৪৭টি পাইলের কাজ শেষ হয়েছে। এসব খুঁটির ওপরে ৪১টি স্প্যান বসানো হবে।
ইতোমধ্যে ১০টি স্প্যান বসে গেছে। ৪২টি খুঁটির মধ্যে ২২টি খুঁটির নির্মাণ পুরোপুরি হয়ে গেছে। আগামী জুন মাসের মধ্যে আরও ১০টি খুঁটির নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। তাই ক্রমশ সেতু দৃশ্যমান হতে চলেছে।