ভোলায় বাস-লঞ্চ চলাচল বন্ধ,বাড়তি নিরাপত্তা জোড়দার

ভোলা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ০১:৫৭ পিএম, শুক্রবার, ২৫ অক্টোবর ২০১৯ | ১৬৬

ভোলার বোরহানউদ্দিনে আল্লাহ ও নবীজিকে নিয়ে ফেসবুকে কুটুক্তি করার প্রতিবাদে বিক্ষোভে পুলিশের সঙ্গে মুসুল্লিদের সংঘর্ষের ৪জন নিহতের ঘটনায় আজ শুক্রবার সর্বদলীয় মুসলিম ঐক্য পরিষদের আয়োজনে দোয়া মুনাজাতকে কেন্দ্র করে প্রশাসন ভোলা-বরিশাল লঞ্চ সার্ভিস ও ভোলার অভ্যন্তরীণ রুটে বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছেন।

এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ভোলায় সর্বদলীয় মুসলিম ঐক্য পরিষদের ব্যানারে ভোলা জেলা পুলিশ সুপার ও বোরহানউদ্দিন থানার ওসির অপসারন সহ ৬দফা বাদীতে ৭২ঘন্টার আলটিমেটাল দেন তারা। এরই ধারাবাহিকতায় আজ শুক্রবার(২৫অক্টোবর) ভোলা সরকারী স্কুল মাঠে নিহতদের স্মরণে দোয়া মুনাজাত করার কথা ছিল। কিন্তু জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অনুমতি দেওয়া হয়নি।

জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির আশঙ্কায় দোয়া-মুনাজাতের অনুমতি দেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন ভোলা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মাসুদ আলম ছিদ্দিক। ভোলা সদর ও বোরহানউদ্দিনে বাড়তি নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

তিনি আরো জানান, পুলিশের অনুরোধে বাস ও লঞ্চ চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। এদিকে বাস ও লঞ্চ বন্ধ থাকায় বিপাকে পরেছে সাধারন মানুষ। ভোগান্তিতে পড়েছেন চিকিৎসার প্রয়োজনে বরিশাল ভোলা আসা শত শত রোগী ও তাদের স্বজনেরা।

ভোলা সরকারী স্কুল মাঠে সর্বদলীয় মুসলিম ঐক্য পরিষদের দোয়া মুনাজাত অনুষ্ঠানের অনুমতি প্রশাসনের না দেওয়ায় ও নিষেধাজ্ঞা জাড়ি করায় তারা আজ শুক্রবারের কর্মসূচি প্রত্যাহার করেছেন বলে জানা যায়।

এদিকে জেলা শহরের প্রায় প্রতিটি মাদ্রাসার সামনে অবস্থান নিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না জনসাধারনকে।এসব মিলিয়ে শুক্রবার সকাল থেকে ভোলায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।

এ ঘটনায় পুলিশের বক্তব্য অনুয়ায়ী, গত ১৮ অক্টোবর ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার বিপ্লব চন্দ্র শুভ নামে এক যুবকের ফেসবুক আইডি হ্যাক করে আল্লাহ ও নবীজিকে গালাগালি করে ম্যাসেঞ্জারের মাধ্যমে তা ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত রোরবার স্থানীয় মুসুল্লিরা বোরহানউদ্দিন ঈদগায়ের মাঠে প্রতিবাদ সমাবেশ আয়োজন করেন। কিন্তু পুলিশ ঐ সমাবেশের অনুমতি দেয়নি এবং মুসুল্লিদের সমাবেশ না করতে অনুরোধ করেন। পুলিশ সেখানে গিয়ে উপস্থিত মুসুল্লিদের সাথে কথা বলেন।

এ সময় সেখানে ভোলা জেলা পুলিশ সুপার বক্তব্য দিয়েছেন। মুসুল্লিরা সবাই তার বক্তব্য শুনেছে। যখন পুলিশ সুপার ষ্টেজ থেকে নেমে আসে তখন একদল উত্তেজিত জনতা আমাদের উপর ইট-পাটকেল ও পাথর ছুড়ে মারে। তখন পুলিশ আত্মরক্ষার্থে পাশের একটি কক্ষে গিয়ে আশ্রায় নেয়। যখন উত্তেজিত জনতা ঐ কক্ষটির জানালা ভেঙ্গে ফেলে তখন পুলিশ প্রথমে টিয়ার গ্যাসশেল ও শর্টগানের ফাকা গুলি ছোড়ে। পরবর্তীতে পরিস্থিতি ভয়াবহতায় ম্যাজিস্ট্রেটের অনুমতি নিয়ে গুলি চালায়। এসময় হাফেজ আবু রায়হান, শাহীন হোসাইন, হাফেজ মাহাফুজ পাটোয়ারী ও মিজানুর রহমান নামের ৪মুসুল্লি নিহত হয়।