বাড়ির পথে হাদিসুরের লাশ

আলোকিতপ্রজন্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৪:১২ পিএম, সোমবার, ১৪ মার্চ ২০২২ | ৪৫৭

ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরে হামলার কবলে পড়া বাংলাদেশি ‘এমভি বাংলার সমৃদ্ধি’ জাহাজের তৃতীয় প্রকৌশলী হাদিসুর রহমানের মরদেহ দেশে এসেছে। সকাল থেকে বিমানবন্দরে লাশ গ্রহণের জন্য অপেক্ষা করছিল তার পরিবার। দুপুর ১২টা ৫ মিনিটে হাদিসুরের লাশবাহী টার্কিশ এয়ারের ফ্লাইটটি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। সেখান থেকে কিছু দাপ্তরিক কাজ শেষে দুপুর ১টায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে লাশবাহী বিশেষ অ্যাম্বুল্যান্সে  হাদিসের মরদেহ গ্রামের বাড়ি বেতাগীর উদ্দেশে রওনা হয়েছে।

হাদিসের ছোট ভাই গোলাম মাওলা প্রিন্স এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। দেশে ফিরে বিয়ে করার কথা ছিল হাদিসুরের। অথচ সাদা কাফনে কফিনবন্দি হয়ে বাড়িতে ফিরছেন তিনি।

ওই লাশবাহী অ্যাম্বুল্যান্সে হাদিসুরের ছোট ভাই প্রিন্স, ছোট চাচা মিজানুর রহমান এবং চাচাতো ভাই ক্যাপ্টেন তসলিম আহমেদ রয়েছেন।

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন এ এইচ এম তৌহিদ-উল আহসান সাংবাদিকদের বলেন, ‘টার্কিশ এয়ারলাইনসের টিকে-৭২২ ফ্লাইটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রকৌশলী হাদিসুর রহমানের মরদেহ এসেছে। ’

পরিবারিক সূত্রে জানা গেছে, হাদিসের মরদেহ আগামীকাল মঙ্গলবার সকাল ১০টায় জানাজা শেষে দাফন করা হবে। হাদিসুরের ছোট চাচা জসিম হাওলাদার বলেন, 'আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি হাদিসের দাদা-দাদির কবরের পাশে তাকে দাফন করা হবে। '

উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মাকসুদুর রহমান ফোরকান বলেন, 'হাদিসের মরদেহ ঢাকা থেকে দুপুর ১টায় রওনা দিয়েছে। গ্রামের বাড়ি বেতাগীর কদমতলা আসতে রাত ৮টা থেকে ৯টা হতে পারে। এসব নির্ভর করবে মাওয়া ফেরির ওপর। এ কারণে রাতে দাফন না দিয়ে আগামীকাল মঙ্গলবার সকাল ১০টায় জানাজা শেষে দাফন করা হবে। '

হাদিসুর রহমান ‘বাংলার সমৃদ্ধি’ জাহাজের থার্ড ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন। জাহাজটি তুরস্ক থেকে রওনা হয়ে গত ২২ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দর জলসীমায় নোঙর করে। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরু হলে অলভিয়া বন্দরের বাণিজ্যিক কার্যক্রম স্থগিত হয়ে যায়।

জাহাজটি ২৯ জন নাবিক ও ক্রু নিয়ে সেখানেই নোঙর করা অবস্থায় আটকা পড়ে। গত ২ মার্চ বাংলাদেশ সময় রাত ৯টা ২৫ মিনিট ও ইউক্রেন সময় ৫টা ২৫ মিনিটে ‘বাংলার সমৃদ্ধি’ জাহাজে রকেট হামলা হয়। এতে জাহাজটিতে আগুন ধরে যায়। হামলায় জাহাজের ব্রিজ ধ্বংস হয়ে যায়। নিহত হন হাদিসুর রহমান।

পরে জীবিত ২৮ নাবিককে ৩ মার্চ বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৬টার দিকে ইউক্রেনের একটি বাংকারে নেওয়া হয়। সেখান থেকে তাদের নিরাপদে রোমানিয়ায় নিয়ে যাওয়া হয়। ইউক্রেনের একটি বাংকারে ‘ফ্রিজআপ’ করে রাখা হয়েছিল হাদিসুরের মরদেহ।   

বাংলার সমৃদ্ধি জাহাজের ২৮ নাবিক ইউক্রেন থেকে মলদোভা, রোমানিয়া হয়ে গত ৯ মার্চ দুপুরে দেশে ফেরেন। হাদিসুর রহমানের মরদেহ গত শুক্রবার ইউক্রেন থেকে মলদোভা হয়ে রোমানিয়ায় আনা হয়। এরপর তা ঢাকায় পাঠানো হয়।