টাঙ্গাইলে লৌহজং নদীর অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ শুরু


প্রায় তিন বছর উদ্ধার কার্যক্রম স্থবির থাকার পর সরকারে নির্দেশনায় তৃতীয় দফায় টাঙ্গাইলের লৌহজং নদী উদ্ধারে উচ্ছেদ অভিযানে নেমেছে কর্তৃপক্ষ।
মঙ্গলবার(২৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে জেলা প্রশাসক মো. শহীদুল ইসলামের নেতৃত্বে সমন্বিতভাবে নদী দখল করে গড়ে উঠা সাততলা বিশিষ্ট একটি ভবন উচ্ছেদের মধ্যে দিয়ে এ উদ্ধার কার্যক্রম শুরু করা হয়। এর আগে বেলা বারটার দিকে পৌর এলাকার ভেড়াডোমায় সভা আয়োজন করে এর উদ্বোধন করা হয়।
এর আগে ২০১৬ সালে ঘটা করে সমন্বিত উচ্ছেদ অভিযানের মাধ্যমে নদীর দুই তীর উদ্ধারে নামে কর্তৃপক্ষ। প্রায় দুই কিলোমিটার অংশের দু'পাড়ের অল্প কিছু অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের পর অজানা কারণে বন্ধ হয়ে যায় লৌহজং নদী উদ্ধার কর্মসূচি। পরে গেল মাসে আবার এ অভিযান শুরু করা হয়।
এদিকে সরকারের নির্দেশনা মোতাবেক নদীর দুই তীরের দশ মিটার বা ৩৩ ফিট করে দখলমুক্ত করার নির্দেশ থাকলেও মানবিক কারণ দেখিয়ে দুই তীরে ২০ ফিট করে অবৈধ স্থাপনা চিহ্নিত করা হয়েছে।
অভিযানের পূর্বে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নদী দখলমুক্ত ঘোষণা দিয়ে পরিমাপ করা হয়। গত ২৩ ফেব্রুয়ারী নদীর দুই পাড় দখল মুক্ত করার জন্য সময় বেধে দেয়া হয়। কিন্তু ক্ষতিগ্রস্থদের সুবিধার্থে আরো ২দিন সময় বাড়িয়ে আজ মঙ্গলবার করা হয়। এ সময়ের মধ্যে অনেকেই বাসাবাড়ি ভেঙ্গে আসবাবপত্র সরিয়ে নেয়। কিন্তু যারা সরিয়ে নেয়নি তাদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে দখলদারদের উচ্ছেদ শুরু করা হয়েছে।
টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসনের পক্ষে থেকে নদীর দুই পাড়ে প্রথম পর্যায়ে তিন কিলোমিটার ২৬০ অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে এবং ধারাবাহিকবাবে ৬৫ কিলোমিটার নদীর অবৈধ দখলদারদের হাত থেকে নদী উদ্বার করা হবে।
উল্লেখ্য, টাঙ্গাইল সদর উপজেলার ঢালান শিবপুর থেকে মির্জাপুরের বংশাই নদী পর্যন্ত প্রায় ৭০ কিলোমিটার দীর্ঘ এক সময়ে খরশ্রোতা এই লৌহজং নদী। নদীটি শহরের অংশেই বয়ে গেছে প্রায় ১০ কিলোমিটার। আর এই ১০ কিলোমিটার অংশের দু'পাশে হাজার হাজার বাড়িঘর ও অবৈধ ভাবে স্থাপনা গড়ে উঠায় দখল দুষণে বর্তমানে সরু নালায় পরিনিতি লাভ করেছে। অথচ এক সময় এই নদী দিয়ে জাহাজ ও লঞ্চ চলতো শহরের আমঘাট পর্যন্ত। কলকাতা ও লন্ডনের সাথে নৌপথে বাণিজ্যিক যোগাযোগ রক্ষায় লৌহজং নদীর ছিলো অপরিসীম ভূমিকা।