ইয়াবা দিয়ে ফাঁসানোর চেষ্টায়

গ্রেফতারকৃত ৩ পুলিশসহ ৪ জন দুইদিনের রিমান্ডে

মির্জাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ০৫:৫৩ পিএম, শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর ২০১৯ | ৬৩০

টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের বাশতৈল পুলিশ ফাঁড়ির জনতার হাতে আটককৃত সেই তিন পুলিশ সদস্য ও তাদের সোর্সকে দুইদিনের রিমান্ড মঞ্জুর হয়েছে। শুক্রবার বিকেলে তাদেরকে টাঙ্গাইল সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শামসুল আলমের আদালতে হাজির করে ৫ দিনের রিমান্ডের আবেদন করলে আদালত ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

বৃহস্পতিবার রাতে সখীপুরের হাতিবান্ধা ই্উনিয়নের হতেয়া রাজাবাড়ি আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় এলাকায় জনতার হাতে আটককৃত মির্জাপুর থানার বাশতৈর পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই রিয়াজুল ইসলাম , কনস্টেবল গোপাল সাহা, মো. রাসেল ও তাদের সোর্স হাসানকে গ্রেফতার করে সখীপুর থানা পুলিশ। মামলার অপর তিন আসামী পুলিশ কনস্টেবল হালিম, মোজাম্মেল এবং তাদের সোর্স হতেয়া রাজাবাড়ি গ্রামের আলামিন। মামলায় পাঁচ পুলিশ ও দুই সোর্সসহ ৭ জনকে আসামী করা হয়েছে বলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই ওমর ফারুক জানিয়েছেন।

পুলিশ ও স্থানীয়দের সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে পাঁচটার দিকে সোর্সসহ ওই পাঁচ পুলিশ সদস্য সাদা পোশাকে রাজাবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয় এলাকায় যান। এ সময় তাঁরা ওই এলাকার মো. ফরহাদের ছেলে দিনমজুর মো.বজলুর রহমানের (২৬) পকেটে ইয়াবা ট্যালেট ঢুকিয়ে দেন। একপর্যায়ে তাঁরা তাঁকে জোর করে একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশায় তোলেন। এ সময় বজলুরের চিৎকারে আশপাশের লোকজন গিয়ে ওই অটোরিকশা আটক করে। পরে বজলুর কাছ থেকে ঘটনার বিবরণ শুনে উপস্থিত লোকজনকে পুলিশ সদস্যদের পকেট তল্লাশি করে আরও কিছু ইয়াবা পায়। এতে বিক্ষুব্ধ জনতা তাঁদের পিটুনি দিয়ে একটি দোকানে আটকে রেখে সখীপুর থানা-পুলিশে খবর দেয়। বিক্ষুব্দ জনতার পিটুনির সময় পুলিশ কনস্টেবল হালিম, মোজাম্মেল ও তাদের সোর্স পালিয়ে যেতে সক্ষম হলেও এএসআই রিয়াজুলসহ চারজনকে আটক করে সখিপুর থানা পুলিশে সোপর্দ করা হয়। পুলিশ আটককৃতদের বাশতৈল পুলিশ ফাড়িতে নিয়ে আসেন। সেখানে পুলিশের উর্দ্বতন কর্মকর্তারা তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন।

খবর পেয়ে মির্জাপুর থানা পুলিশের এসআই ফয়েজ উদ্দনের নেতৃত্বে একটি টিম ঘটনাস্থলে যান। ঘটনাস্থল সখিপুর থানা হওয়ায় আটককৃত এবং পলাতক পুলিশ সদস্য ও সোর্সদের বিরুদ্ধে সখিপুর থানার এসআই আইনুল হক বাদি হয়ে সখিপুর থানায় রাতেই মাদক আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা নম্বর ১৬, তারিখ ২৮-১১-২০১৯।

স্থানীয়দের অভিযোগ, গত বুধবার একই কায়দায় এএসআই রিয়াজুল তাঁর সহযোগীদের নিয়ে মির্জাপুর উপজেলার টান পলাশতলী গ্রামের বাছেদ মিয়ার ছেলে আনোয়ারের নিকট থেকে এক লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।

হাতীবান্ধা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিনের ছেলে নিয়ামুল বলেন, ‘এটা সখীপুর থানা-এলাকা। গত এক সপ্তাহ ধরে মির্জাপুর থানার বাঁশতৈল পুলিশ ফাঁড়ির পুলিশেরা এ এলাকায় এসে সাধারণ মানুষের পকেটে ইয়াবা দিয়ে টাকা আদায় করে হয়রানি করে আসছিল।’

এদিকে শুক্রবার বিকেলে গ্রেফতারকৃত তিন পুলিশ সদস্য মির্জাপুর থানার বাশতৈর পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই রিয়াজুল ইসলাম , কনস্টেবল গোপাল সাহা, মো. রাসেল ও তাদের সোর্স হাসানকে টাঙ্গাইল সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্টেট শামসুল আলমের আদালতে হাজির করে পাঁচদিনের রিমান্ডের আবেদন করা হলে আদালত তাদের দুইদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন বলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এ্সআই ওমর ফারুক জানিয়েছেন।

সখিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আমির হোসেন বলেন জনতার হাতে আটককৃতসহ ৪ জনসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে মাদক আইনে মামলা হয়েছে। পলাতকদের গ্রেফতারে জোর চেষ্টা চলছে।