মির্জাপুরে সরকারি বনের
গজারি কপিচ কর্তন মামলায় যুবলীগ নেতাসহ দুই ঠিকাদার জেল হাজতে


টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে বনের গজারি কপিচ (চারা) কর্তন মামলায় যুবলীগের এক নেতাসহ দুই ঠিকাদার এখন জেল হাজতে। বন বিভাগের দায়ের করা মামলায় ৮ মে বুধবার টাঙ্গাইলের আদালতের বিচারক তাদের জামিন নামঞ্জুর করে জেল হাজতে পাঠান। দুই ঠিকাদাররা হলেন শেখ ট্রেডার্সের স্বত্তাধিকারী ও টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলা যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. দেলোয়ার হোসেন সাথী (৫০) এবং মো. আব্দুল হালিম (৫২)।
মো. দেলোয়ার হোসেন সাথী সখীপুর উপজেলার কালিয়া ইউনিয়নের কচুয়া গ্রামের মো. রবি মিয়া ও মো. আব্দুল হালিম একই উপজেলার বহেরাতৈল ইউনিয়নের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও খামারচারা গ্রামের মো. ফরহাদ হোসেনের ছেলে।
বন বিভাগ সূত্র জানান, বন আইনে বন বিভাগের গজারি গাছ কেটে বনের ভেতর দিয়ে পাকা রাস্তা নির্মাণ করা যাবে না। কিন্তু স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর আইআরআইডিপি-২ এর অর্থায়নে এক কোটি ৩২ লাখ ৯৬৬ টাকা ব্যয়ে উপজেলার আজগানা ইউনিয়নের আজগানা-মজিদপুর ১৮শ মিটার রাস্তা উন্নয়নের টেন্ডার আহবান করা হয়।
সখিপুরের শেখ ট্রেডার্স নামে একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাজটি পায়। ঠিকাদার রাস্তাটি নির্মাণে বনের গজারি কপিচ কর্তন শুরু করলে বন বিভাগের কর্মকর্তারা এতে বাঁধা দেন। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের স্বত্তাধিকারী মো. দেলোয়ার হোসেন ও বন বিভাগের কর্মকর্তাদের মধ্যে জটিলতা দেখা দেয়। বন বিভাগের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান বনের গজারি কপিচ কর্তন অব্যাহত রাখে।
বন বিভাগের বাঁশতৈল রেঞ্জের কুড়িপাড়া বিট কর্মকর্তা মো. জাহিদ হোসেন বাদী হয়ে গত ২১ এপ্রিল অধ্যাদেশ আইনে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান শেখ ট্রেডার্সের স্বত্তাধিকারী মো. দেলোয়ার হোসেন সাথী ও মো. আব্দুল হালিমকে আসামী করে টাঙ্গাইলের বন বিভাগের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট মো. আরিফুল ইসলামের আদালতে মামলা করেন। আদালতের বিচারক মির্জাপুর ও সখীপুর থানায় তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারী পারোয়ানা জারি করেন।
গত বুধবার দেলোয়ার হোসেন সাথী ও আব্দুল হালিম বন আদালতে হাজির হয়ে জামিন প্রার্থনা করলে আদালতের বিচারক মো. আরিফুল ইসলাম তাদের জামিন নামঞ্জুর করে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
মির্জাপুর উপজেলা প্রকৌশলী মোহাম্মদ আরিফুর রহমানের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আজগানা ইউনিয়নের অবহেলিত পাহাড়ি এলাকার মানুষের দুর্ভোগ লাগবে স্থানীয় সাংসদের অগ্রাধিকার প্রকল্পের আওতায় টেন্ডারের মাধ্যমে আজগানা-মজিদপুর পাকা রাস্তা নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ঠিকাদার ও তাদের লোকজন বন বিভাগের কোন গাছ কাটেননি। তবে বন বিভাগের সাথে সমন্বয় করে রাস্তা নির্মাণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে বলে তিনি জানান।
বাঁশতৈল রেঞ্জের রেঞ্জার (ভারপ্রাপ্ত) মো. সিরাজুল ইসলাম জানান, বন ধ্বংস করে বনের ভেতর দিয়ে বনের জমি দখল করে পাকা রাস্তা নির্মাণের কোন সুযোগ নেই।